Header Ads

২০২৩ বিশ্বকাপ কেন বাংলাদেশের হবে?

 

 ২০২৩ বিশ্বকাপ কেন বাংলাদেশের হবে? 


বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবথেকে প্রিয় ফরম্যাট হচ্ছে একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ বা ওয়ান-ডে । এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের যত ক্রিকেটিয় অর্জন রয়েছে তার বেশিরভাগই এসেছে এই ফরম্যাট থেকে । টাইগারদের প্রিয় ফরম্যাট এ বিশ্বকাপ আসলে সবথেকে বেশি খুশি দেখা যায় বাংলাদেশ ক্রিকেট ফ্যানদের কেননা এই একটি ফরম্যাট এই তারা বাংলার ক্রিকেট ভক্তদের মন জয় করতে পারে ।

সর্বশেষ ২০১৯ বিশ্বকাপের কথা বললে দেখা যাবে ভালো ভাবে শুরু করতে পারলেও এখানে শেষ করতে পারে নাই টাইগাররা । সেই বিশ্বকাপে টাইগাররা মোট ৯ টি ম্যাচ এর মধ্যে ৮ টি ম্যাচ খেলতে পেরেছিল এবং ১টি ম্যাচ মাঠে খেলা হয় নি বৃষ্টির জন্য যা ছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে । 

আসরটির প্রথমে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশ নিজেদের মিশন শুরু করেছিল যেখানে তারা তাদের একদিনের ম্যাচের সবথেকে বড় সংগ্রহের দেখা পায় আগে ব্যাট করে যা ছিলা ৩৩০ রানের । যা অবশ্য একই আসরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভেঙে ফেলে টাইগার ব্যাটাররা । 

নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফ্রিকার বিপক্ষে আগে ব্যাট করে ৩৩১ রানের টার্গেট দিয়ে ২১ রানের জয় তুলে নেয় মাশরাফি বাহিনী । উক্ত ম্যাচে বাংলাদেশের নায়ক ছিলেন বাংলার ক্রিকেটের জান নাম্বার ওয়ান সাকিব আল হাসান । বল হাতে ১০ ওভারে ৫০ রান দিয়ে ১ উইকেটের পাশাপাশি ব্যাট হাতে করেন ৮৪ বলে ৭৫ রানের এক গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস । এছাড়াও ব্যাট হাতে দারুন ছিলেন মুশফিক, মাহমুদুল্লাহ ও মোসাদ্দেক এবং বোলিং এ ভূমিকা ছিল মুস্তাফিজ,সাইফুদ্দিন ও মিরাজদের । 

প্রথম ম্যাচ টাইগার দের এমন খেলা দেখে অনেকেই চমকে উঠেছিল এবং সবাই ধারণা করেছিল যে ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন ট্রফির মতো ২০১৯ বিশ্বকাপের টাইগাররা সেরা ৪ বা সেমি ফাইনালে নিজেদের যায়গা করে নেবে । 

কিন্তু ২য় ম্যাচ থেকেই মূলত টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পরতে থাকে টাইগাররা । নিজেদের ২য় ম্যাচে হট ফেভারিট নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রায় পাওয়া ম্যাচে মুশিফিকের রান আউট মিস করায় ম্যাচটিতে হার মেনে হয়েছিল টাইগার ফ্যানদেরকে । এমন ভাবেই প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই খারাপ করে টাইগাররা । 

এরপরে নিজেদের ৩য় ম্যাচে স্বাগতিক ইংল্যান্ড এর কাছে দাড়াতেই পারেনি টাইগাররা যেখানে তাদের দেওয়া ৩৮৬ রানের টার্গেট এর বিপক্ষে বাংলাদেশ শুদু মাত্র ২৮০ রান করতে সক্ষম হয় তাও সাকিবের শতকের ওপর ভর করে । 

এরপরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের এক রেকর্ড জয় দেখতে পেলেও পরের রাউন্ডে আর যাওয়া হয় নি বাংলাদেশের । উক্ত ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আগে ব্যাটিং করে বাংলাদেশকে ৩২২ রানের এক বড় টার্গেট ছুরে দিলেও সাকিবের শতক ও লিটনের ৯৫ রানের ইনিংসে বাংলাদেশ জয় তুলে নেয় প্রায় ৮ ওভার খেলা বাকি থাকতেই । 

পরের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার সাথে দেখা হয় টাইগারদের যেখানে আগে ব্যাট করে অজিরা ৩৮২ রানের টার্গেট ছুরে দেও বাংলাদেশ এর ব্যাটারদের যেখানে ম্যাচ জিতে আসতে না পারলেও ৩৩৩ রানের নিজেদের করা সবথেকে বেশি রানের ইনিংস খেলে টাইগার ব্যাটাররা । 

এরপরে আফগানদের বিপক্ষে জয় পেলেও পরের বা শেষ ২ ম্যাচে বাংলাদেশ পরাজিত হয় ভারত ও পাকিস্থানের কাছে ২৮ ও ৯৪ রানে । এবং নিজেদের ১৯ বিশ্বকাপ শেষ করে পয়েন্ট তালিকার ৮ নাম্বার দল হিসেবে যেখানে বাংলাদেশের থেকে পিছিয়ে ছিল শুধু মাত্র আফগানিস্থান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ । 

২০১৯ বিশ্বকাপ থেকে বাংলাদেশ দলের কোন বড় প্রাপ্তি না পেলেও বাক্তিগত কিছু অর্জন এর দেখা পায় বাংলার সাকিব আল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমান । ২০১৯ বিশ্বকাপ ছিল সাকিবের এমন কথা বললেও ভুল কিছু বলা হবে না কেন সাকিব যে আল রাউন্ডার খেলা দেখিয়ে ছিল তা এর আগে খুব কম মানুষ এই দেখিয়েছিল এবং বল হাতে টুর্নামেন্ট এর ৩য় সবথেকে বেশি উইকেট সংগ্রহক ছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান ৮ ম্যাচে বল হাতে ২০ উইকেট পেয়েছিলেন এই কাটার মাস্টার । 


এই সকল কথার ভিত্তিতে বলা যায় যে ২০২৩ বিশ্বকাপ এ বাংলাদেশের ভালো কিছু করার সুযোগ রয়েছে । কেন এমন কথা বলা হয়েছে নিচে কিছু কারণ দেওয়া হলোঃ- 

ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপ 

২০২৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ভালো কিছু করার জন্য সবথেকে বড় সুবিধা হচ্ছে ভারতের কন্ডিশন । আসরটি সম্পূর্ণ হবে ভারতে এবং খেলাটি সম্ভবত হতে চলেছে আগস্ট মাসে এবং এই সময় ক্রিকেট খেলার জন্য সবথেকে ভালো আবহাওয়া বিরাজ করে । 

ভারতের মাটিতে আসরটি হওয়ায় আমাদের অনেক দিন থেকেই ভালো খেলার জন্য সুবিধা হবে, প্রথমত আমাদের কন্ডিশনের সঙ্গে ভারতের অনেক মিল রয়েছে এবং খেলার উইকেট গুলোও অনেক স্পিন সহায়ক হয়ে থাকবে যেখানে বাংলাদেশ অবশ্যই অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড এর থেকে বেশি সুবিধা পাবে এছাড়াও আমাদের ভারতের মাটিতে খেলার জন্য অনেক ধরনের আলাদা সুযোগ সুবিধা থাকছে যা থাকছে এর মধ্যে অন্যতম হলো বাংলাদেশী ক্রিকেট ফ্যানদের থেকে পাওয়া স্টেডিয়াম এর পরিবেশ তবে মূল কথা ভারতের কন্ডিশনের সাথে মিল থাকায় একটু সুবিধা পাবে বাংলাদেশ দল । 

সাকিব-তামিমদের শেষ বিশ্বকাপ 

২০২৩ বিশ্বকাপ হয়ত শেষ বিশ্বকাপ হবে সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিমের । নিজেদের ক্যারিয়ারের শেষ সময়ে দেশকে আলাদা কিছু দিতে চাইবে এরা ৪ জন এ কথা বলতে বাকি থাকে না । নিজেদের সুন্দর ক্যারিয়ারের ইতি ও হয়তো টানবেন অনেকেই কিন্তু এদের ৪ জনের জন্য অন্তত দলের মধ্যে আলাদা একটা পরিবেশ থাকবে সবাই নিজেদের সেরাটা দিবেন । জেতার জন্য খেলবেন সবাই ।

সুপার লিগে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স

২০২৩ বিশ্বকাপ কুয়ালিফাই করার জন্য হোস্ট দল (ভারত) বাদের সবাইকে বিশ্বকাপ খেলার জন্য খেলতে হচ্ছে কুয়ালিফাই রাউন্ড বা সুপার লিগ যেখানে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স লক্ষণীয় প্রায় এক বছর পয়েন্ট টেবিলে থাকা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান ১২০ পয়েন্ট নিয়ে ৩য় স্থানে এবং তালিকার ১ম স্থানে থাকা ইংল্যান্ড এর পয়েন্ট ১২৫ । যেখানে এই সুপার লিগের নিচে মধ্যে বাংলাদেশ এবং ইংল্যান্ড এর একটি সিরিজ ও রয়েছে এবং এটি ২০২৩ সালে বাংলাদেশের মাটিতে । সেই সিরিজেই পয়েন্ট টেবিলের ১ম স্থানের দল নির্ধারণ হবে । 

সুপার লিগের খেলায় বাংলাদেশ জয় পেয়েছে সাউথ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দলের বিপক্ষে এবং এই জয়গুলো পরের বছরে হতে যাওয়া ২০২৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে অনেক সাহায্য করবে ভালো কিছু করতে । 

৫০ ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশের ভালো খেলা চলছে ২০১৪-২০১৫ সালের সিরিজ এর মধ্য দিয়ে, এই সময় থেকেই বাংলাদেশ দল পুরোপুরি বদলে গেসে বিশেষ করে এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে । ২০২৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ভালো কিছু করার পিছনে তরুণদের ও অনেক অবদান দেখতে পারে বাংলাদেশি ক্রিকেট ভক্তরা । 


কেননা বর্তমানে বাংলাদেশ দলের মধ্য ধারাবাহিক ফর্ম এ রয়েছে যারা তাদের মধ্য লিটন দাস, আফিফ হোসাইন, তাসকিন ও মোসাদ্দেক এর মতো খেলোয়াড় রয়েছেন । 

একদিনের ক্রিকেটে বাংলাদেশ যে পজিটিভ খেলা খেলছে তাতে ২০২৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের দলের ভালো কিছু করার সম্ভবনা অনেক বেশি । এছাড়াও এই আসরটি এখন পর্যন্ত হাওয়া আসর গুলোর মধ্যে সবথেকে আলাদা হতে যাচ্ছে বাংলার কোটি কোটি ক্রিকেট ভক্তের জন্য । একদিকে প্রিয় ক্রিকেটার দের বিদায়তো অন্য দিকে এশিয়া এর মাটিতে ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপ ।

ওপরের আলোচনা হতে এটা বলাই যায় যে বাংলাদেশ ক্রিকেট ভক্তদের জন্য ২০২৩ বিশ্বকাপ হতে চলেছে টান টান উত্তেজনা তে ভরা একটি ক্রিকেট আসর এবং সাকিব তামিমদের বিদায়ী বিশ্বকাপ যে এদেশের কোটি কোটি ভক্তের মনে গেথে থাকবে যুগের পর যুগ ধরে তাই বলাই যায় ২০২৩ বিশ্বকাপ বাংলাদেশের ।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ